পশ্চিম আফ্রিকার সিয়েরালিওনে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং দুর্নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নেয়ার পর বুধবার বিকেলে সারাদেশে কারফিউ জারি করেছে সরকার।
রাজধানী ফ্রি টাউন এবং দেশের বিভিন্ন শহরে মানুষজন প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস মাডা বিওর পদত্যাগের দাবি তোলে। এসময় তারা ‘বিও মাস্ট গো’ অর্থাৎ (প্রেসিডেন্ট) বিওকে সরতে হবেই বলে স্লোগান দেয়।
বৃহস্পতিবার সিয়েরালিওনে সহিংসতায় পুলিশের ছয়জন সদস্য মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশের আইজি উইলিয়াম ফাভিয়া সেল্লু। তবে বিক্ষোভকারীদের কতজন মারা গেছেন তার হিসাব এখনো পাওয়া যায়নি।
দেশে নেই প্রেসিডেন্ট বিও
জানা গেছে, পরিবার নিয়ে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন প্রেসিডেন্ট বিও। সরকারের দায়িত্ব এখন ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহামেদ জুলদে জাল্লোর ওপর। তিনিই বুধবার দেশ জুড়ে কারফিউ জারি করেন।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সরকারের মধ্যে দুর্নীতি এবং পুলিশের বাড়াবাড়ি নিয়ে অনেক দিন ধরেই মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ছিল। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির জেরে সেই ক্ষোভ এখন ফেটে পড়েছে।
বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সিয়েরা লিওনের ৮০ লাখ জনসংখ্যার অর্ধেকই দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করে।
অস্থির নিরাপত্তা পরিস্থিতি
মঙ্গলবার থেকে বিক্ষোভ শুরু হলেও বুধবার তা চরম আকার ধারণ করে। মানুষজন রাজধানীর লাংগি বিমানবন্দরমুখী সড়ক অবরোধ করে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনার পরপরই দেশে জুড়ে কারফিউ জারি করেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহামেদ জাল্লো। তিনি বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের অভিযোগ করে বলেন, পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের সমন্বয়কারী সেনাবাহিনীকে বিক্ষোভ সামলাতে পুলিশকে সাহায্য করতে বলেন। অনলাইনে ফাঁস হওয়া সরকারি এক গোপন চিঠিতে দেখা যায় ওই কর্মকর্তা দেশে ‘অস্থির নিরাপত্তা পরিস্থিতি’ সম্পর্কে সতর্ক করছেন।
জানা গেছে, সিয়েরালিওন জুড়ে ইন্টারনেট সেবা কার্যত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর জোট ইকোওয়াস সিয়েরালিওনে সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে ইকোওয়াস আইন মেনে চলার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানায়।
সূত্র : বিবিসি