ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় ১৩ বছরের এক কিশোরী কন্যা সন্তান প্রসব করেছেন। বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে সন্তান জন্ম দেন তিনি। ওই কিশোরী ও নবজাতকের পিতৃপরিচয় নিয়ে চিন্তিত তার পরিবার। কারণ কিশোরী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল দুই ধর্ষক রুবেল মিয়া ও সাইদুল মিয়াকে আসামি করে কিশোরির বাবা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর রুবেলকে পুলিশ গ্রেফতার করে কিন্তু সাইদুল পালিয়ে যান।
মামলার নথি ও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাদৈর ইউনিয়নের এক কৃষকের ৮ ছেলে-মেয়ের মধ্যে ৩য় ওই কিশোরী। স্বামী-স্ত্রী দুজনই কৃষিকাজ করেন। গত বছরের ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় ওই কিশোরী বাড়ির পাশে মৃত ইয়াকুব আলীর ছেলে রুবেল মিয়ার (৩৫) মুদি দোকানে কয়েল আনতে যান। রুবেলের দোকানে একই এলাকার মৃত সোলেমান মিয়ার ছেলে সাইদুল মিয়া (২০) উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় দোকানদার রুবেল মিয়া ও সাইদুল মিয়া ওই কিশোরীকে জোরপূর্বক ধরে দোকানের পেছনে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণ শেষে ঘটনা জানালে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। প্রাণের ভয়ে ওই কিশোরীও বিষয়টি কাউকে জানাননি। ঘটনার ৬ মাস পর ওই কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের চাপে তিনি ধর্ষণের কথা জানান। পরে জেলা শহরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরীক্ষা-নীরিক্ষা শেষে চিকিৎসক জানান ওই কিশোরী ২৩ সপ্তাহের গর্ভবতী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিজারিয়ান অপারেশনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ওই কিশোরী একটি কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছেন। ধর্ষক দুজন হওয়ায় এই নবজাতকের বাবা কে তা শনাক্ত করা যায়নি। এখন ওই কিশোরীর পরিবার তার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কসবা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুর রহমান বলেন, মামলা দায়েরের পর আমরা একজন আসামিকে গ্রেফতার করি এবং ওই কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষা করিয়েছি। কিশোরীটি একটি কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। শিশুটির পিতৃ পরিচয় শনাক্ত করতে আইন অনুযায়ী সব করবো আমরা। যেহেতু একজন আসামি গ্রেফতার আছেন তার নমুনা ও নবজাতকের নমুনা নিয়ে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। পলাতক অপর আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা করে যাচ্ছি আমরা। গ্রেফতারের পর তারও ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করা হবে।