প্রবল বৃষ্টির জেরে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে পাকিস্তান। বন্যায় দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯৩৭ জন মারা গেছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ৩৪৩ জন শিশু রয়েছে। এছাড়া বন্যায় বাড়ি-ঘর হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন অন্তত ৩ কোটি মানুষ। আজ শুক্রবার (২৬ আগস্ট) দেশটির শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দুর্যোগ কবলিত এলাকা ও সেখানকার জনগণের বর্তমান পরিস্থিতিকে মারাত্মক জলবায়ু সংকট বলে উল্লেখ করে শাহবাজ শরীফের প্রশাসন। একই সঙ্গে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা দেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব।
ভারী বৃষ্টিপাতি সৃষ্ট বন্যায় বেলুচিস্তান ও সিন্ধু প্রদেশের অবস্থা নাজুক। পানিতে তলিয়ে গেছে হেক্টরের পর হেক্টর জমি। পাকিস্থানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ)-এর তথ্য অনুযায়ী, গত ১৪ জুন থেকে শুরু হওয়া বন্যায় শুধু সিন্ধু প্রদেশেই তিন শতাধিক মানুষ মারা গেছেন। বেলুচিস্তানে মারা গেছেন ২৩৪ জন। খাইবার পাখতুনখোয়ায় ১৮৫ ও পাঞ্জাবে ১৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজাদ জম্মু-কাশ্মিরে বন্যার কবলে ৩৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এ বন্যায় গিলগিট-বালতিস্তান থেকেও মৃত্যুর খবর আসছে।
বৃহস্পতিবার বিবৃতিতে পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব দেশের বন্যা পরিস্থিতিকে জাতীয় জরুরি অবস্থা হিসেবে উল্লেখ করেন। সরকার উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে বলে জানান তিনি। অস্বাভিক বৃষ্টিপাতে পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চল আকস্মিক বন্যায় ভাসছে। এনডিএমের তথ্যমতে, পাকিস্তানে চলতি আগস্টে ১৬৬ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে ২৪১ শতাংশ। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সিন্ধু ও বেলুচিস্তানে মৌসুমি বন্যা ৭৮৪ ও ৪৯৬ শতাংশ বেড়েছে।
সিন্ধুর ২৩টি জেলাকে দুর্যোগ আক্রান্ত ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। অব্যাহত বন্যায় তিন কোটি মানুষ আশ্রয়হীন, তাদের মধ্যে হাজারো মানুষ খাবারের কষ্টে ভুগছে। আশ্রয়হীনদের সহায়তায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।
এদিকে পাকিস্তানের জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শেরি রেহমান জানিয়েছেন, দেশটিতে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য ইতোমধ্যে ‘ওয়ার রুম’ স্থাপন করা হয়েছে। তিনি জানান, অবিরাম আগ্রাসী ও ভারী বৃষ্টিপাত ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন করে তুলেছে। এমনকি হেলিকপ্টারে করে বন্যাদুর্গত এলাকায় যাওয়াও মুশকিল হয়ে উঠেছে।