টাঙ্গাইলে সরকারি শিশু পরিবারের (বালিকা) একাধিক শিশুকে বেত্রাঘাতসহ ৫০০ বার কান ধরে উঠবসের অভিযোগ উঠেছে এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। রবিবার (২৮ আগস্ট) সকালে সরকারি ওই প্রতিষ্ঠানের শিশুরা জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়ে মৌখিকভাবে এমন অভিযোগ করেন।
জানা যায়, সরকারি শিশু পরিবার বালিকায় ৮২ জন এতিম শিশু রয়েছে। এছাড়াও একজন বৃদ্ধা রয়েছেন। ওই ৮২ জন এতিম শিশু বাইরের বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। সরকারি শিশু পরিবারের দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষক বুশরাত জাহান একদিন বিদ্যালয়ে না যাওয়ার অভিযোগে একাধিক শিক্ষার্থীকে সম্প্রতি কঠোরভাবে বেত্রাঘাত করেন। এ সময় শিশুদের কান ধরে উঠবসও করানো হয়। শিশুরা প্রতিবাদ করলে ওই শিক্ষকের নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এরমধ্যে বেত্রাঘাতের ফলে কয়েকজন শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে।
রবিবার সরকারি শিশু পরিবারের একাধিক শিশু টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়ে মৌখিকভাবে তাদের নির্যাতনের বিষয়টি জানায়। জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে তারা সরকারি শিশু পরিবারে ফিরে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিশু জানায়, আমরা এতিম হওয়ায় সরকারি শিশু পরিবারে থাকি। এছাড়াও পাশের বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি। বিদ্যালয়ে ক্লাস শেষে আবার কার্যালয়ে ফিরে আসি। এখানে শিক্ষকরা আমাদের দেখাশোনা করেন। একদিন বিদ্যালয়ে না যাওয়ার কারণে এখানে দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষক বুশরা জাহান আমাদের একাধিকবার বেত্রাঘাতসহ ৫শ বার কান ধরে উঠবস করিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা ডিসি স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি।
এছাড়াও গত ঈদুল আজহায় শিশুদের নতুন পোশাক দেওয়া হয়নি। এখানে নিম্নমানের খাবার পরিবেশনের অভিযোগও রয়েছে শিশুদের। এ ঘটনায় ভুল স্বীকার করে অভিযুক্ত শিক্ষক বুশরাত জাহান বলেন, তাদের ভালোর জন্যই শাসন করেছি। এ ধরনের ভুল আর হবে না।
টাঙ্গাইল সরকারি শিশু পরিবারের (বালিকা) উপ-তত্ত্বাবধায়ক তানিয়া আক্তার বলেন, বিষয়টি নিয়ে ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি সন্তোষজনক জবাব দিয়েছেন। বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি ছিল। এখন সমাধান হয়েছে। জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, ইতোপূর্বে ওই শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছিল। আজ (রবিবার) তাকে বদলি করা হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি জানান, শিশুরা আমার কাছে এসেছিল। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।