৭, মে, ২০২৪, মঙ্গলবার
     

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে নায়িকা নিপুণের আপিল

নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলে আপিল বোর্ডের দেওয়া রায় স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিপক্ষে আবেদন করেছেন নিপুণ।

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে মঙ্গলবার সকালে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করেন চলচ্চিত্র সমিতির নির্বাচনের পর সাধারণ সম্পাদক পদে শপথ নেওয়া নিপুণ।

তার আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আজ আবেদন শুনানির জন্য দাখিল করা হবে। তা না হলে আবেদনটি বুধবার চেম্বার আদালতে উপস্থাপন করা হবে।

এর আগে সোমবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে জয়ী জায়েদ খানের সাধারণ সম্পাদক পদ বাতিল করে দেওয়া আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে আদেশ দেন হাইকোর্ট।

জায়েদ খানের করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্ট একই সঙ্গে প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে এক সপ্তাহের রুল জারি করেছেন।

আপিল বোর্ড, সমাজসেবা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টদের আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি ওই রুল শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

সোমবার আদালতে রিট শুনানিতে জায়েদ খানের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ হোসেন হুমায়ন, অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম ও অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ। আদালতের এ আদেশের পর শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জায়েদ খানের নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যেতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারি চিত্রনায়িকা নিপুণের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলে সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করেন নির্বাচনি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান চিত্রপরিচালক সোহানুর রহমান সোহান ও সদস্য প্রযোজক মোহাম্মদ হোসেন।

একই দিন আর কোনো প্রার্থী না থাকায় নিপুণকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন তারা। আপিল বোর্ডের এ সিদ্ধান্ত অবৈধ দাবি করে আদালতে রিট আবেদন করেন জায়েদ খান। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জায়েদ খানের সাধারণ সম্পাদক পদ বাতিল করে আপিল বোর্ডের নেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের এমন আদেশে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে জায়েদ খান যুগান্তরকে বলেন, ‘আমি আমার অধিকার ফিরে পেয়েছি। শিল্পীরা আমাকে ভালোবেসে তাদের সেবা করার জন্য ভোট দিয়েছে। আমি ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। একজন নির্বাচিত ব্যক্তিকে গায়ের জোরে সরিয়ে দিয়ে চেয়ারে বসে গেলেই তো হবে না! বাধ্য হয়ে আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি। তারা অনেক ষড়যন্ত্র করেছে। শেষ পর্যন্ত সত্যের জয় হয়েছে। আমি জানি, এই ষড়যন্ত্র এখানেই শেষ হবে না। নির্বাচনের আগে থেকেই এসব করে আসছে তারা।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিল্পীদের প্রত্যক্ষ ভোটে সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরও আমার সঙ্গে অন্যায়-অবিচার করা হয়েছে। সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও নির্বাচনি তফসিল অনুযায়ী অকার্যকর হয়ে যাওয়া আপিল বোর্ডের নামে দুজন ব্যক্তি অবৈধভাবে আরেকজনকে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে দিয়েছেন। এগুলো সব আগে থেকেই সাজানো। তবে একটা কথা আমি বিশ্বাস করি, সব সময় সত্যের জয় হয়। আমি জানি আমি কোনো অন্যায় করিনি। আমি হাইকোর্টে বিচার পেয়েছি।’

গত ২৮ জানুয়ারি শিল্পী সমিতির ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২৯ জানুয়ারি ভোররাতে ফল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত ফলে সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চন জয়লাভ করেন। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হন জায়েদ খান। একই পদে চিত্রনায়িকা নিপুণ হেরে যান ১৩ ভোটে।

               

সর্বশেষ নিউজ