১২, মে, ২০২৪, রোববার
     

সাগরে লঘুচাপ, ঘূর্ণিঝড় আসছে

দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি ঘনীভূত হয়ে সোমবার সকালে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। গতিমুখ অনুযায়ী উপকূলের দিকে এগিয়ে আসলে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূলে আঘাত হানতে পারে- এমন আভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অফিস।

তবে বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস ঘূর্ণিঝড়ের কোনো বার্তা দেয়নি। তবে ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে নাম হতে পারে ‘অশনি’। নামটি প্রস্তাব করেছে শ্রীলঙ্কা। এর অর্থ হচ্ছে ‘বাজ বা বজ্র’।

ভারতের আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গতকাল (১৫ মার্চ) ভারত সাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের মধ্যভাগে অবস্থান করছে। এটি ধীরে ধীরে পূর্ব ও উত্তর-পূর্বদিকে এগিয়ে ১৯ মার্চ সকালে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন আন্দামান সাগরে গভীর লঘুচাপে পরিণত হতে পারে। এরপর ২০ মার্চ আনন্দাম নিকোবর দ্বীপের কাছাকাছি এসে এটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। আর ২১ মার্চ সকালে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়টি ২২ মার্চ উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে যেতে পারে। ২৩ মার্চ এটি আরও উত্তর ও পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূলে যেতে পারে।

গত কয়েক বছর ধরে যত সামুদ্রিক ঝড় এসেছে- তার সবগুলোই প্রায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হেনেছে।

বর্তমানে লঘুচাপটির কেন্দ্রস্থলে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিমি পর্যন্ত উঠছে। এটি বেড়ে ২৩ মার্চ ৮০ কিমি পর্যন্ত উঠে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে ১৭ মার্চ থেকে সাগর উত্তাল হয়ে উঠবে। আর ২৩ মার্চ সেটি বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠার আশঙ্কা রয়েছে।

আবহাওয়াবিদ খোন্দকার হাফিজুর রহমান জানান, নিরক্ষীয় ভারত মহাসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি বর্তমানে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের মধ্যভাগে অবস্থান করছে। এ ছাড়া পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে আগামী সপ্তাহে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে চৈত্রের মাত্র দুদিন গেল। এরমধ্যেই শুরু হয়েছে খরতাপ। বিশেষ করে দেশের উত্তর, দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলের অন্তত ১৯ জেলার পরিস্থিতি বেশি দুর্বিষহ। এসব অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আরও অন্তত দুদিন এই অবস্থা চলবে। এই দাবদাহে মানুষের হাসফাঁস অবস্থা।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ঢাকা, ফরিদপুর, রাজশাহী, পাবনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, সিলেট, কুষ্টিয়া, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, নড়াইল, বাগেরহাট, মাগুরা, মেহেরপুর, যশোর ও সাতক্ষীরার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায় ১৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদদের তথ্য অনুযায়ী, তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা ‘মৃদু’ এবং ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা ‘মাঝারি’ তাপপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেলে তাকে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সেই হিসাবে দেশে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

               

সর্বশেষ নিউজ