২, মে, ২০২৪, বৃহস্পতিবার
     

গ্রাহকদের ২০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও এসবিএসএল কোম্পানি

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে এসবিএসএল নামে একটি মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানির বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোম্পানিটির প্রতারণার ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে প্রায় ৩০০ পরিবার।

ভুক্তভোগীরা জানান, কুমারখালীতে তিন প্রতারক এসবিএসএল কোম্পানির কার্যক্রম শুরু করেন। তারা হলেন- ঝিনাইদহের শৈলকূপার সাজ্জাদ হোসেন, একই জেলার মহেশপুরের মহসিন আলী ও কুমারখালীর গোবরা গ্রামের আল-ইমরান।

আর তাদের প্রতারণার কাজে সহযোগিতা করেন কুমারখালীর জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ব্যবসায়ী হান্নান। তিনি মানুষজনকে ফুসলিয়ে ১২০০ টাকা দিয়ে কোম্পানির আইডি খুলতে বলেন। প্রতি আইডি থেকে প্রতিদিন ১০ টাকা ও আইডির ১২০০ টাকার বিনিময়ে সমমূল্যের পণ্য দেওয়ার আশ্বাস দেন হান্নান। প্রথম দিকে কিছু ব্যক্তি টাকা ও পণ্য পাওয়ার কারণে অনেকেই আইডি খুলতে উৎসাহিত হন।

কোম্পানিটির প্রতারণার ফাঁদে সর্বস্বান্ত হয়েছেন- পৌরসভার তেবাড়িয়া গ্রামের হুমাইয়া, আলাউদ্দিন নগরের নাহিদ হাসান, শরিফ, টুটুল, বানিয়াকান্দির ইমন, যদুবয়রার সোবাহান ও ইমরান।

এসব ভুক্তভোগী জানান, উপজেলার প্রায় ৩০০ পরিবার তাদের মতো প্রতারিত হয়েছে। তারা আরও জানান, হান্নান স্থানীয় ব্যবসায়ী। কোম্পানির সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা থাকায় সাধারণ মানুষ সহজেই তাকে বিশ্বাস করে। পরবর্তীতে তারাপুরের হাসানসহ অনেক সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী এসবিএসএল কোম্পানিতে যোগ দেন। তাদের কোম্পানির ফাউন্ডারও ঘোষণা দেওয়া হয়। স্থানীয়ভাবে পরিচিত হওয়ায় তাদের মাধ্যমে প্রায় তিন লক্ষাধিক আইডি খোলা হয়।

ভুক্তভোগীরা জানান, বিভিন্ন জেলা থেকে এসবিএসএল কোম্পানি প্রতারণার মাধ্যমে ৪০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছে।

গ্রাহক হুমাইয়া যুগান্তরকে জানান, হান্নানের মাধ্যমে তিনি কোম্পানিতে যোগদান করেন। তিনি আত্মীয় ও বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ তুলে ২২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। বর্তমানে ঋণের বোঝা ঘাড়ে নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি হান্নানের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান।

বানিয়াকান্দি গ্রামের কলেজছাত্র ইমন জানান, তার বাবা একজন ভ্যানচালক। তারাপুরের হাসান তাকে বিভিন্নভাবে প্রলুব্ধ করে এসবিএসএল কোম্পানিতে দুই লাখ টাকা বিনিয়োগ করান। বর্তমানে হাসানকে টাকার কথা বলতে গেলে তিনি কোনো পাত্তা দেন না। এমনকি অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন।

এ বিষয়ে কোম্পানির ফাউন্ডার হান্নানের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, সবার মতো তিনিও প্রতারণার শিকার। এসবিএসএল কোম্পানিতে তিনিও মোটা অংকের টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কোম্পানির চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসিন আলী ও অর্থ পরিচালক আল- ইমরানের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান।

কুমারখালী থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বেশকিছু অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। কোম্পানির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রমাণসাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

               

সর্বশেষ নিউজ